পেলভিক ব্যথার সম্ভাব্য কারণ

শ্রোণীতে ব্যথা সাধারণত পেটের নীচে কিন্তু পায়ের উপরে অনুভূত হয়। পেলভিক ব্যথার কারণ অনেক হতে পারে। কখনও কখনও এটি হজমের সমস্যা, মহিলাদের ঋতুচক্র ইত্যাদির মতো সাধারণ কারণে ঘটে। 

তলপেটে বা পেলভিসে যে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয় তাকে পেলভিক পেইন বলে। এটি একটি নিস্তেজ ব্যথা বা একটি ধারালো ঝাঁকুনির মতো গুরুতর হতে পারে। এইভাবে অনুভূত শ্রোণী ব্যথা সবসময় কোনো রোগের কারণে ঘটে না। ব্যথা বেশি দিন থাকতে পারে বা নাও থাকতে পারে। 

এটি যেমন কোনো রোগ নির্দেশ করে না। কোষ্ঠকাঠিন্য, ঋতুস্রাব, পূর্ণ মূত্রাশয়, যৌন ব্যথা, গর্ভাবস্থা ইত্যাদির মতো সাধারণ কারণে এটি ঘটতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে জ্বর, যোনিপথে রক্তপাত, ভারী যোনি স্রাব হলে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হয়। পেলভিস এলাকায় আকস্মিক এবং তীব্র ব্যথা সহ অপ্রীতিকর গন্ধ (যোনি, জরায়ু, জরায়ু, ডিম্বাশয় বা ফ্যালোপিয়ান টিউবের মতো প্রজনন অঙ্গগুলির সমস্যার কারণে হতে পারে)। যদি ব্যথা তীব্র হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে এটি ডাক্তারের সাহায্যে নির্ণয় করা যেতে পারে। শুধুমাত্র একটি মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে, আপনার ডাক্তার ব্যথার অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ বলতে পারেন। 

পেলভিক ব্যথা কি?

পেলভিক ব্যথা বলতে বোঝায় অস্বস্তি বা ব্যথা তলপেটের অংশে, বিশেষ করে পেটের বোতামের নীচে এবং নিতম্বের মধ্যবর্তী অঞ্চলে। এটি বিভিন্ন কারণ থেকে উদ্ভূত হতে পারে যেমন প্রজনন সমস্যা, প্রস্রাবের সমস্যা, হজমের ব্যাধি, বা পেশীবহুল অবস্থা। পেলভিক ব্যথা হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে এবং দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হতে পারে, যা পুরুষ এবং মহিলা উভয়কেই প্রভাবিত করে। 

পেলভিক ব্যথার সম্ভাব্য কারণ

পেলভিক ব্যথার সম্ভাব্য কারণগুলি এখানে আলোচনা করা হয়েছে:

1. ওভারিয়ান সিস্ট: একটি ডিম্বাশয়ের সিস্ট একটি ফলিকল ডিম্বাণু ছাড়ার জন্য না খোলার কারণে হয়। অথবা মুক্তির পরেই এটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং তরল দিয়ে ফুলে যেতে পারে। এই অবস্থার কারণে পেলভিক ব্যথা, ফোলাভাব, ফোলাভাব ইত্যাদি হয়। ডিম্বাশয়ের সিস্টগুলি নিজে থেকেই যেতে পারে। যদি হঠাৎ বা তীব্র ব্যথা হয় তবে এটি সিস্ট ফেটে যাওয়া বা মোচড়ের কারণে হতে পারে। এমন জরুরী পরিস্থিতিতে একজন রোগীকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। 

2. পিএমএস/মাসিক বাধা: যে মহিলারা তাদের মাসিক চক্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারা সাধারণত তাদের নীচের পেটে ব্যথা অনুভব করে। জরায়ুর আস্তরণ ভেঙ্গে না যাওয়া পর্যন্ত লক্ষণগুলো কয়েকদিন স্থায়ী হয়। কিছু ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম এই সময়ে স্বস্তি দিতে সাহায্য করে। ওটিসি ওষুধ, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, এবং এন্টিডিপ্রেসেন্টগুলি এই ধরনের ক্র্যাম্পের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। বিকল্পভাবে, আপনি যেখানে ব্যথা অনুভব করেন সেখানে একটি উত্তপ্ত প্যাড ব্যবহার করা যেতে পারে।

3. জরায়ু ফাইব্রয়েড: এগুলি জরায়ুর দেয়ালে বেড়ে উঠতে দেখা যায়। এগুলি ক্যান্সারবিহীন এবং এর ফলে কোনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হয় না। 30 এবং 40 বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে এগুলি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অন্যান্য উপসর্গ যা রোগীকে প্রভাবিত করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে ভারী পিরিয়ড, তলপেটে ব্যথা, বেদনাদায়ক লিঙ্গ, তলপেটে চাপ এবং গর্ভবতী হতে অসুবিধা। 

4. কিডনিতে পাথর: কিডনির পাথর বেদনাদায়ক। কিডনিতে পাথর অনেক ব্যাথা করে। আকার ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হয়। লবণ ও খনিজ পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এবং সেখানেই আমানত পাথরের আকারে তৈরি হতে শুরু করে। তারা বেশিরভাগই স্বাভাবিকভাবে সিস্টেমের বাইরে চলে যায়, কিন্তু যদি না হয় তবে সঠিক চিকিত্সার মাধ্যমে তাদের অপসারণ করা হয়। 

5. মূত্রনালীর সংক্রমণ: মূত্রাশয় পূর্ণ হয়ে গেছে। এটি একটি ঘন ঘন প্রস্রাব করে। এবং প্রস্রাব করার সময় ব্যাথা করে। প্রস্রাব অল্প পরিমাণে বের হয়। যখন মূত্রনালীর সংক্রামিত হয়, তখন আপনি এই সমস্ত লক্ষণগুলির সাথে শ্রোণীতে ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এটি বন্ধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অন্যথায় এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। UTI এছাড়াও বমি বমি ভাব, জ্বর, বমি এবং নীচের পিঠে ব্যথা হতে পারে। 

6. একটোপিক গর্ভাবস্থা: যখন একটি ভ্রূণ জরায়ুর বাইরে রোপণ করা হয় তখন একটি তীক্ষ্ণ পেলভিক ব্যথা অনুভূত হয়। এটি ফ্যালোপিয়ান টিউবে বাড়তে শুরু করতে পারে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা এবং যোনিপথে রক্তপাত। এটি অবিলম্বে পদক্ষেপের জন্য আহ্বান জানায় এবং আপনার গর্ভাবস্থায় এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি থাকলে আপনাকে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। 

7. যৌন রোগে: কিছু এসটিডি পেলভিক ব্যথার লক্ষণ দেখায়। সম্ভবত সেই ব্যক্তি ক্ল্যামাইডিয়া বা গনোরিয়া বা উভয়েই ভুগছেন। ব্যথা অনুভূত হতে পারে বা নাও হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের মধ্যে রক্তপাতের পাশাপাশি অস্বাভাবিক যোনি স্রাব হতে পারে। পুরুষ এবং মহিলা উভয় রোগীর ক্ষেত্রেই প্রস্রাব করা বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। STDs চিকিৎসার জন্য কল করে।

8. ক্ষত কোষ: একটি সাম্প্রতিক অস্ত্রোপচার বা সংক্রমণের ফলে পেলভিক ব্যথা হতে পারে। এগুলি আনুগত্যের কারণে ঘটে। কেস সার্জারি বা একটি পদ্ধতির উপর নির্ভর করে দাগের টিস্যু চিকিত্সা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। 

9. দীর্ঘস্থায়ী পেলভিক ব্যথা: ব্যথা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে থাকে এবং এর কোনো আপাত কারণ নেই। এটি সাধারণত ঘুমের ব্যাধি, মানসিক চাপ, চাকরি এবং সম্পর্ক-সম্পর্কিত সমস্যা ইত্যাদির সাথে যুক্ত। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়েও, শ্রোণীতে ব্যথার কারণ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ডাক্তার আপনাকে উপদেশ দিবেন আপনার ক্ষেত্রে মানানসই সর্বোত্তম উপযুক্ত নিরাময়। 

10. ইন্টারস্টিশিয়াল সিস্টাইটিস (আইসি): যে সমস্ত মহিলারা তাদের 30 এবং 40 এর মধ্যে তাদের আইসিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি পেলভিক ব্যথা এবং মূত্রাশয়ের প্রদাহের দিকে পরিচালিত করে। এই ধরনের রোগীদের যৌন মিলন, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা এবং পিউবিক এলাকার উপরে অবিরাম চাপ দিয়ে একাধিকবার প্রস্রাব করা বেদনাদায়ক হতে পারে। 

পেলভিক ব্যথা বিভিন্ন কারণে অনুভূত হয় এবং এটি ঘটলে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। যাইহোক, সঠিক রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে পেলভিক ব্যথার পিছনে কারণগুলি সনাক্ত করা হলে ব্যথার ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতা অবশ্যই একজন ডাক্তারের নির্দেশনা এবং চিকিত্সার জন্য আহ্বান করে। একবার কারণটি স্পষ্ট হয়ে গেলে, একজন ব্যক্তি একজন ডাক্তারের সাহায্যে নিরাময় করতে পারেন। 

পেলভিক ব্যথার লক্ষণ

পেলভিক ব্যথা বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশ পেতে পারে এবং অন্তর্নিহিত কারণের উপর ভিত্তি করে লক্ষণগুলি পৃথক হতে পারে। পেলভিক ব্যথার সাথে যুক্ত সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

• তলপেটে অস্বস্তি
• বাধা
• সহবাসের সময় ব্যথা
• বেদনাদায়ক প্রস্রাব 
• অনিয়মিত মাসিক চক্র
• কোষ্ঠকাঠিন্য, বা ডায়রিয়া

পেলভিক ব্যথা কিভাবে নির্ণয় করা হয়?

পেলভিক ব্যথা নির্ণয়ের একটি ব্যাপক পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

• শারীরিক পরীক্ষা: শ্রোণী, পেট, এবং কখনও কখনও মলদ্বার বা যৌনাঙ্গ পরীক্ষা সহ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরিক পরীক্ষা।
• সংক্রমণ, প্রদাহ বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ পরীক্ষা করার জন্য রক্ত ​​পরীক্ষা। 
• আল্ট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, বা এক্স-রে পেলভিক অঙ্গ, হাড় এবং টিস্যু কল্পনা করতে, যে কোনও অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করে।
• এন্ডোস্কোপিক পদ্ধতি: ল্যাপারোস্কোপি বা হিস্টেরোস্কোপি নির্ণয় বা চিকিত্সার উদ্দেশ্যে পেলভিক অঙ্গগুলি সরাসরি দেখতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
• মহিলাদের জন্য, স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষা, প্যাপ স্মিয়ার ইত্যাদি।

পেলভিক ব্যথা কিভাবে চিকিত্সা করা হয়?

পেলভিক ব্যথার চিকিত্সা তার অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে। পেলভিক ব্যথার জন্য কিছু চিকিত্সা পদ্ধতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

• মেডিকেশন: ব্যথা উপশমকারী, প্রদাহ বিরোধী, পেশী শিথিলকারী, বা সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক, ডাক্তার দ্বারা নির্দেশিত।
• হরমোন থেরাপি: এন্ডোমেট্রিওসিস বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার মতো অবস্থার জন্য হরমোনের ওষুধ।
• শারীরিক চিকিৎসা: পেলভিক মেঝে ব্যায়াম, প্রসারিত, বা ম্যানুয়াল থেরাপি পেশী টান উপশম করতে বা পেলভিক এলাকায় পেশী ফাংশন উন্নত.
• অস্ত্রোপচারের হস্তক্ষেপ: এন্ডোমেট্রিওসিস, ফাইব্রয়েড বা পেলভিক অর্গান প্রল্যাপসের মতো অবস্থার জন্য অস্ত্রোপচারের পদ্ধতির প্রয়োজন হতে পারে।
• জীবনধারা পরিবর্তন: খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন, ব্যায়াম, স্ট্রেস কমানোর কৌশল বা ট্রিগার এড়ানো যা ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।

কিভাবে বাড়িতে পেলভিক ব্যথা চিকিত্সা?

• বাড়িতে পেলভিক ব্যথার চিকিত্সা অস্বস্তি পরিচালনা করতে সহায়তা করার জন্য বেশ কয়েকটি স্ব-যত্ন কৌশল অন্তর্ভুক্ত করতে পারে:
• হিটিং প্যাড প্রয়োগ করা বা উষ্ণ স্নান করা পেলভিক পেশী শিথিল করতে এবং ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে।
• এসিটামিনোফেন বা আইবুপ্রোফেনের মতো ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথা ব্যথা উপশমকারী সাময়িক স্বস্তি প্রদান করতে পারে। সর্বদা প্রস্তাবিত ডোজ নির্দেশিকা অনুসরণ করুন।
• ব্যথাকে আরও খারাপ করে এমন ক্রিয়াকলাপ এড়ানো অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

যদিও এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি হালকা ক্ষেত্রে উপশম দিতে পারে, তবে অবিরাম বা গুরুতর পেলভিক ব্যথার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অন্তর্নিহিত অবস্থার জন্য নির্দিষ্ট চিকিত্সার প্রয়োজন হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় পেলভিক ব্যথা

পেলভিক ব্যথা গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ অস্বস্তি, এবং এটি বিভিন্ন কারণের জন্য দায়ী করা যেতে পারে। এখানে গর্ভাবস্থার কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে:

গর্ভাবস্থায় পেলভিক ব্যথার কারণ:

• বৃত্তাকার লিগামেন্ট ব্যথা: গোলাকার লিগামেন্টগুলি জরায়ুকে সমর্থন করে এবং ক্রমবর্ধমান জরায়ুকে মিটমাট করার জন্য প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে তীক্ষ্ণ, শ্যুটিং ব্যথা হতে পারে।
• সিম্ফিসিস পিউবিস ডিসফাংশন (এসপিডি): এটি ঘটে যখন লিগামেন্টগুলি যা সাধারণত পেলভিক জয়েন্টকে স্থিতিশীল রাখে খুব শিথিল হয়ে যায়, যার ফলে ব্যথা এবং অস্বস্তি হয়।
• শ্রোণী অঙ্গের উপর বর্ধিত চাপ: ক্রমবর্ধমান জরায়ু, শিশুর ওজন সহ, পেলভিক অঞ্চলে চাপ দিতে পারে, অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
• হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভাবস্থার হরমোন, যেমন রিলাক্সিন, জয়েন্ট এবং লিগামেন্টগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, পেলভিক ব্যথায় অবদান রাখে।
• ভঙ্গি পরিবর্তন: গর্ভাবস্থার অগ্রগতির সাথে সাথে, ভঙ্গিতে পরিবর্তন এবং একজন মহিলা তার ওজন বহন করার উপায় শ্রোণী অস্বস্তিতে অবদান রাখতে পারে।

পেলভিক ব্যথা পরিচালনার জন্য টিপস

গর্ভাবস্থায় পেলভিক ব্যথা পরিচালনার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছে:

• প্রসবপূর্ব ব্যায়াম: শ্রোণী তল এবং মূল পেশী শক্তিশালী করে এমন ব্যায়ামে জড়িত থাকুন। জন্মপূর্ব যোগব্যায়াম এবং পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম সাহায্য করতে পারে।
• সঠিক ভঙ্গি: আপনার ভঙ্গি সম্পর্কে সচেতন থাকুন। দীর্ঘ সময়ের জন্য দাঁড়ানো বা বসা এড়িয়ে চলুন এবং প্রয়োজনে সহায়ক কুশন ব্যবহার করুন।
• গর্ভাবস্থা সমর্থন বেল্ট: কিছু মহিলা গর্ভাবস্থা সমর্থন বেল্ট ব্যবহার করে স্বস্তি খুঁজে পান, যা তলপেট এবং পেলভিক এলাকায় সমর্থন প্রদান করতে পারে।
• উষ্ণ স্নান: উষ্ণ স্নান পেশী শিথিল করতে এবং পেলভিক ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
• বিশ্রাম এবং পা বাড়ান: বিশ্রামের জন্য বিরতি নেওয়া এবং বসা বা শুয়ে থাকার সময় আপনার পা উঁচু করা পেলভিক এলাকায় চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
• পেলভিক ফ্লোর ফিজিক্যাল থেরাপি: পেলভিক হেলথের বিশেষজ্ঞ একজন ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট পেলভিক ব্যথা পরিচালনার জন্য ব্যায়াম এবং কৌশল প্রদান করতে পারেন।
• সহায়ক পাদুকা: আরামদায়ক, সহায়ক জুতা পরা আপনার ভঙ্গিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং শ্রোণী অঞ্চলে চাপ কমাতে পারে।

পেলভিক ব্যথা প্রতিরোধ করা যেতে পারে?

বিভিন্ন সম্ভাব্য কারণের কারণে শ্রোণীতে ব্যথা সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। যাইহোক, কিছু জীবনধারার ব্যবস্থা গ্রহণ করলে পেলভিক ব্যথার ঝুঁকি বা ফ্রিকোয়েন্সি কমাতে সাহায্য করতে পারে:

• নিয়মিত পেলভিক ব্যায়াম (যেমন কেগেলস) পেশী শক্তিশালী করতে পারে এবং পেশী দুর্বলতা বা কর্মহীনতার সাথে সম্পর্কিত ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারে।
• ফল, শাকসবজি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ একটি সুষম খাদ্য বজায় রাখা হজমের স্বাস্থ্যকে উন্নীত করতে পারে, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলির সাথে যুক্ত ব্যথা কমাতে পারে।
• স্ট্রেস কমানোর কৌশল যেমন রিলাক্সেশন ব্যায়াম, বা যোগব্যায়াম স্ট্রেস বা টেনশনের কারণে পেলভিক ব্যথা পরিচালনা করতে সহায়তা করতে পারে।
• একটি ভাল ভঙ্গি বজায় রাখুন এবং দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা এড়িয়ে চলুন।
• পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
• ট্রিগারগুলি সনাক্ত করা এবং এড়ানো যেমন নির্দিষ্ট খাবার, কার্যকলাপ বা অবস্থান যা ব্যথা বাড়িয়ে তোলে।

তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা মনোযোগ: সময়মত চিকিত্সা পেতে এবং তীব্রতা রোধ করার জন্য শ্রোণীতে ব্যথা হতে পারে এমন লক্ষণ বা অবস্থার সম্মুখীন হলে অবিলম্বে চিকিৎসার পরামর্শ নিন।

উপসংহার

যদিও এই ব্যবস্থাগুলি পেলভিক ব্যথার কিছু কারণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে, তবে নির্দিষ্ট ঝুঁকির কারণগুলিকে মোকাবেলা করা এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে প্রতিরোধ কৌশলগুলির জন্য ব্যক্তিগতকৃত নির্দেশনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করা অপরিহার্য।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

1. পেলভিক ব্যথা কোথায় অনুভূত হয়?

পেলভিক ব্যথা সাধারণত পেটের নীচের অংশে, পেটের বোতামের নীচে এবং নিতম্বের মাঝখানে অনুভূত হয়। ব্যথা তীব্রতা পরিবর্তিত হতে পারে এবং একপাশে কেন্দ্রীভূত বা তার বেশি হতে পারে।

2. পেলভিক ব্যথা কি নিজে থেকেই চলে যেতে পারে?

কিছু ক্ষেত্রে, পেলভিক ব্যথা নিজে থেকেই সমাধান হতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি অস্থায়ী কারণের সাথে সম্পর্কিত হয় যেমন গোলাকার লিগামেন্ট ব্যথা বা গর্ভাবস্থায় জরায়ুতে পরিবর্তন। যাইহোক, অন্তর্নিহিত কারণ এবং উপযুক্ত চিকিত্সা নির্ধারণের জন্য একটি স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার দ্বারা স্থায়ী বা গুরুতর শ্রোণী ব্যথার মূল্যায়ন করা উচিত।

3. শ্রোণী ব্যথা এবং পেটে ব্যথার মধ্যে পার্থক্য কী?

পেলভিক ব্যথা বলতে বিশেষভাবে পেটের নিচের অংশে, পেলভিক এলাকার চারপাশে অস্বস্তি বা ব্যথা বোঝায়। পেটে ব্যথা একটি বিস্তৃত শব্দ যা উপরের, মাঝারি এবং নীচের অঞ্চল সহ পুরো পেটের অঞ্চলে অস্বস্তি বা ব্যথাকে অন্তর্ভুক্ত করে। পেলভিক ব্যথা হল পেটের ব্যথার একটি উপসেট, তলপেট এবং শ্রোণী অঞ্চলের উপর ফোকাস করে।

4. চাপ কি শ্রোণী ব্যথা হতে পারে?

মানসিক চাপ পরোক্ষভাবে পেলভিক ব্যথায় অবদান রাখতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস পেশী টান হতে পারে, যা পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে এবং পেলভিক অঞ্চলে ব্যথায় অবদান রাখতে পারে। উপরন্তু, স্ট্রেস-সম্পর্কিত অবস্থা, যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS), পেট এবং শ্রোণীতে অস্বস্তির কারণ হতে পারে।

5. পেলভিক ব্যথা কতক্ষণ স্থায়ী হয়?

পেলভিক ব্যথার সময়কাল অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। পেলভিক ব্যথার কিছু উদাহরণ, যেমন গর্ভাবস্থায় গোলাকার লিগামেন্ট ব্যথা, অস্থায়ী হতে পারে এবং সময়ের সাথে সাথে সমাধান হতে পারে। যাইহোক, দীর্ঘস্থায়ী পেলভিক ব্যথা, যা একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্থায়ী হয়, একটি অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থার ইঙ্গিত হতে পারে এবং একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার দ্বারা মূল্যায়ন প্রয়োজন।